গৌরনদী প্রতিনিধি : বরিশালের গৌরনদীর পালরদী মডেল স্কুল এন্ড কলেজর ছাত্র ও ছাত্রলীগকর্মী সাকির গোমস্তা হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত আসামি ফাহিমকে গ্রেফতারের পর থানা থেকে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় ওসি মনিরুল ইসলামকে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে। তিন সদস্যে’র তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রতিবেদন দাখিল করার পর ওসি মনিরুলকে শুক্রবার রাতে গৌরনদী থানা থেকে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।
নিহত সাকিরের মা আলেয়া বেগম ও বড় ভাই জাকির হোসেন অভিযোগ করেছিলেন, গত ২১ নভেম্বর দুপুরে ঘটঁনার পরপরই স্থানীয়রা সাকিরের ওপর হামলাকারী ও হত্যা মামলার ৬ নং আসামি ফাহিমকে ঘটঁনাস্থল থেকে ধরে গৌরনদী থানার এসআই শামছুউদ্দিনের কাছে ফাহিমকে সোপর্দ করেন। এরপর ওই এস.আই ফাহিমকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ওইদিন সন্ধ্যায় থানার ওসি মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়ে ফাহিমকে ছেড়ে দেয়।
থানার এক কর্মকর্তা জানান, ফাহিমকে ধরে আনায় ক্ষুব্ধ হন ওসি মনিরুল। ওসি আসামি ফাহিমকে ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দিলে এসআই শামসুদ্দিন আসামিকে ছেড়ে না দিয়ে ডিউটি অফিসারকে বুঝিয়ে দিয়ে বরিশালে যান। পরদিন (২২ নভেম্বর) পালরদী মডেল উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মানববন্ধন চলাকালিন সময়ে পরিদর্শনে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মফিজুল ইসলাম। এ সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ওসি মনিরুলের বিরুদ্ধে সাকির হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ফাহিমকে থানায় ধরে নিয়ে ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেন। এ সংক্রান্ত খবর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হলে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই সময় পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানিয়ে ছিলেন ওসি মনিরুলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার আসামি ছেড়ে দেয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মফিজুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যে’র তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। তদন্তে ওসি মনিরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ওসি মনিরুলকে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ওসি মনিরুল মাদক নির্মূলসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডে অযোগ্যতার প্রমান দেয়ায় তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়। গৌরনদী থানার কাউকে ইনচার্জের দায়িত্ব দেয়া হয়নি। তবে থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আফজাল হোসেন আপাতত চলতি দায়িত্ব পালন করবেন বলে পুলিশ সুপার জানান।
উল্লেখ্য, উপজেলার পালরদী মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ শিক্ষকদের গালাগাল করে স্থানীয় যুবলীগ কর্মীরা। এসময় ছাত্রলীগের কর্মী একাদশ শ্রেনীর ছাত্র সাকির গোমস্তা প্রতিবাদ করলে সোহেল গোমস্তা, ইলিয়াছ খান, সুমন হাওলাদার, এমরান মীর ও ফাহিমের নেতৃত্বে যুবলীগের ১০/১২ কর্মী ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে সাকিরকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। ২১ নভেম্বর গভীর রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাকিরের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা আলেয়া বেগম বাদী হয়ে ৬ জনের নামোল্লেখ করে যুব ও ছাত্রলীগের ১২ কর্মীকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply